Header Ads

করোনা পরিস্থিতিতে আপনার চোখ কতটা নিরাপদ? এই সময় কিভাবে যত্ন নেবেন চোখের। চিকিত্সক সৌভিক বন্দোপাধ্যায়ের প্রতিবেদন। https://daktarbabu.in/eye-infection-and-corona-epi-12-dr-souvik-banerjee/.in

আপাতত কনট্যাক্ট লেন্স না পরা, প্রসাধনের ব্যবহার না করা আর চশমা এবং সানগ্লাস পরা। চোখের রোগ ছড়িয়ে পড়া আটকানোর জন্য এই কৌশলগুলি আবশ্যিক। বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ সৌভিক বন্দোপাধ্যায় জানালেন ডাক্তারবাবু.ইন (daktarbabu.in) র প্রতিবেদনে। 
https://daktarbabu.in/eye-infection-and-corona-epi-12-dr-souvik-banerjee/.in


1. করোনায় কি চোখের সংক্রমণও হতে পারে ?

কোভিড-১৯ রোগের  সর্বাধিক  সাধারণ  লক্ষণ  হল  জ্বর, কাশি  এবং  শ্বাসকষ্ট। কিন্তু কখনও এটিতে চোখের  সংক্রমণও  হতে  পারে  যা  কনজাঙ্কটিভাইটিস (নেত্রবর্ত্মকলাপ্রদাহ ) নামে পরিচিত । কোভিড-১৯ রোগীদের চোখের লালচে ভাব এবং জ্বালা হওয়ার বেশ কয়েকটি প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা দীর্ঘদিন  অজানা এবং অপ্রকাশিত ছিল। পরে বিষয়টি জেনে সেইমত বিশেষজ্ঞ সংস্থা পরামর্শ দেয় যে কনজাঙ্কটিভাইটিস সারস-কভ -২ সংক্রমণের একটি বিশেষ লক্ষণ হতে পারে। 

2. চোখের সংক্রমণের কোনও প্রমান পাওয়া গেছে ?

২০০৩ সালে গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্র জনিত সিন্ড্রোমের (এসএআরএস ) সময় একটি সমীক্ষায় সিঙ্গাপুরের সারস রোগীদের টিয়ার (চোখের জল ) স্যাম্পলগুলিতে সারস-কভ সনাক্ত হয়েছিল। যেহেতু  কনজাঙ্কটিভাইটিস  চোখের  অসুখ, অনেক  ক্ষেত্রে চক্ষু বিশেষজ্ঞরাই  প্রথম পেশাদার চিকিৎসক  যারা  কোভিড-১৯ রোগীর  মূল্যায়ন  করতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে, চিনের রোগীদের মধ্যে করোনভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রথম উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ এম ওয়েন লিয়েনলিং। পরে তিনি কোভিড-১৯-এ  আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

3. চোখের সমস্যার কোন লক্ষণ দেখে করোনা চিহ্নিত করা যায় ?

এখনও অবধি প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে, চিকিৎসকরা বিশ্বাস করেন যে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ১% -৩% মানুষের কনজাঙ্কটিভাইটিস হতে পারে, যাকে পিঙ্ক আই ও বলা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি বিশেষ6 ধরণের ফলিকুলার কনজাঙ্কটিভাইটিস দেখা যায়। এখানে ভাইরাসটি কঞ্জাঙ্কটিভা নামক চোখের গোলকের বাইরের একটি টিস্যুকে সংক্রামিত করে, যা আপনার চোখের বাইরের সাদা অংশ এবং আপনার চোখের পাতার ভেতরের অংশটি ঢেকে রাখে। লাল চোখ, চোখের স্ফীত ভাব, চোখের জল পড়া,চোখে জলের মত অথবা গাঢ় পিচুটি পড়া,জ্বালা  করা, চুলকানি র লক্ষণগুলি  থাকলে  অবশ্যই সতর্ক  থাকতে  হবে।

4. তাহলে কনজাঙ্কটিভাইটিস হলেই সতর্ক থাকা জরুরি ?

কারোর যদি কনজাঙ্কটিভাইটিস থাকে তার অর্থ এই নয় যে তাঁর কোভিড-১৯ রয়েছে। অন্য কারণগুলি হল বিভিন্ন রকমের মরশুমি ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া, বা ছত্রাকের আক্রমণ অথবা রাসায়নিক, দূষিত পরিবেশ এবং অ্যালার্জেন যা চোখকে জ্বালাতন করতে পারে। তবে  এর  সঙ্গে  যদি করোর জ্বর,কাশি  বা  শ্বাসকষ্ট  হয়  অবশ্যই  ডাক্তারবাবুকে  জিজ্ঞাসা  করা দরকার , এটি  নিরাপদ  কিনা  তা  দেখার  জন্য। কোভিড -১৯ রোগীর অস্পষ্ট দৃষ্টি, সাবকনজাঙ্কটিভাল হেমারেজ,কনজাঙ্কটিভাল স্কারিং,কেরাটাইটিস বা সিউডোমেমব্রেন গঠনের অভিজ্ঞতা আছে বলে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও এতে চোখের ছানি, গ্লকোমার  কোনও সমস্যা বা চোখের নার্ভের কোনও ক্ষতি হওয়ার তথ্যও নেই।

5. অন্য কি অসুখ হতে পারে ?

কোভিড-১৯ আক্রান্তের চোখের অসুবিধার মধ্যে বেশিরভাগ রোগীরই হালকা কনজাঙ্কটিভাইটিস হয়, যেটা অন্যান্য ভাইরাল কারণ থেকে পৃথক নয়। পাশাপাশি চোখের লাল ভাবের অন্য কারণগুলি উল্লেখ্য ঃ

অন্যান্য ভাইরাল কনজাঙ্কটিভাইটিস (যেমন,অ্যাডেনোভাইরাস)

ব্যাকটিরিয়া কনজাঙ্কটিভাইটিস

অ্যালার্জিক কনজাঙ্কটিভাইটিস

হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস কেরাইটিস

পূর্ববর্তী ইউভিয়াইটিস

কর্নিয়াল ঘর্ষণ

শুকনো চোখের সিনড্রোম

এক্সপোজার কেরোটোপ্যাথি

কেমোসিস (অন্যান্য কারনে )

6. সংক্রমণ কি ভাবে ছড়িয়ে পড়ে?

চোখ সহ মিউকাস ঝিল্লিগুলির সাথে সরাসরি যোগাযোগ হল সংক্রমণের সন্দেহজনক পথ। সারস -কভ -২ নামে নতুন করোনা ভাইরাসটি প্রাথমিকভাবে কাশি বা হাঁচি থেকে সংক্রামিত হয় । এই কণাগুলি প্রায়শই আপনার নাক বা মুখের পাশাপাশি আপনার চোখ দিয়ে প্রবেশ করে । যদি আপনি ভাইরাসের অস্তিত্ব আছে এরকম টেবিলের উপরতল, দরজার হাতল বা অন্য কোনও সারফেসকে স্পর্শ করেন তাহলে সংক্রমণের সম্ভাবনা তৈরি হয়। তবে এটিই ভাইরাসটি ছড়িয়ে যাওয়ার প্রধান উপায় বলে মনে হয় না।

7. আক্রান্ত রোগী কিভাবে অন্যদের সংক্রামিত করতে পারেন ?

যদি কারোর কোভিড-১৯ হওয়ায় কনজাঙ্কটিভাইটিস থাকে তবে তিনি অন্যদের সংক্রামিত করতে পারেন। আর সংক্রামিত ব্যক্তি যদি নিজের চোখ স্পর্শ করেন এবং হাত না ধুয়ে বা জীবাণুমুক্ত না করে অন্য কারোকে বা সারফেস স্পর্শ করেন তার ফলে অন্যদের সংক্রামিত করতে পারেন। । নিজের মুখ স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন, বিশেষত আপনার মুখ,নাক এবং চোখের যাবতীয় অংশ । কোভিড-১৯র আরও মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করার জন্য সাম্প্রতিক জ্বর, শ্বাসকষ্টের লক্ষণ, এক্সপোজার এবং বাইরে গিয়েছিলেন কি না তা জানতে সমস্ত রোগীদের জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজনীয়।

No comments

Powered by Blogger.