পাহাড়ি কাশফুল রূপে লক্ষ্মী গুণে সরস্বতী। চাষে হতে পারে লাভ।
জীবনে যতই দুঃখ থাক শরতের কাশফুল মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলে, মনে আনন্দ জাগায়। বাংলার ঘরে ঘরে খুশিতে নেচে ওঠে সকলে। দূর্গা পূজোর আগমনী বার্তা বহন করে কাশফুল। আর এই সাদা পালকের মতো তুলতুলে নরম কাশফুল বহু গুণের অধিকারীনি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বহু মানুষ কাশফুলের চাষকে জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কাশফুল চাষের উপর জোর দিতে বলেছেন। উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ির কাশফুলের চাষকে ব্যবসায়ীরূপ দিতে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।
পাহাড়ি কাশফুল দিয়ে ঝাড়ু, মাদুর, ঘরের বেড়া, ছাউনি, ঝুড়ি তৈরি করা হয়। পাহাড়ি ঘাস সমতলের কাশফুল থেকে লম্বা হয় তাই পাহাড়ি কাশকে কাজে লাগানো যায় অনেক ভাবে।পাহাড়ি কাশ মূলত লম্বা কান্ডের ঘাস। উচ্চতা ১০-১৫ ফুট। পাতার রং ধূসর-সবুজ এবং পাতার মাঝখানে সাদা বর্ণের মধ্যশিরা থাকে। এরা গুচ্ছাকারে বা ঝাড় আকারে বেড়ে ওঠে। ঝাড় কোনো বাধা না পেলে চারদিকে বিস্তৃত হয়। পাহাড়ের যেখানে জল জমে থাকে না সেখানকার শিলা, পাথর ও বালুযুক্ত মাটিতে ভালো জন্মে এই কাশ। তাই পাহাড়ের ঢালে, টিলায় এদের বেশি জন্মাতে দেখা যায়। তবে পাহাড়ি নদীর কাছে এলিয়ে পড়া উপত্যকায় মাঝে মাঝে দেখা মেলে। পাহাড়ি কাশ হল বহুবর্ষজীবি পাহাড়ি উদ্ভিদ। এটি ঘাস পরিবারের সদস্য। বীজের মাধ্যমে এদের বংশবিস্তার ঘটে। বাতাসের মাধ্যমে এ ঘাসের বীজ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং বীজ থেকে নতুন চারা গজায়। তবে অত্যধিক আহরণের ফলে বর্তমানে পাহাড়ি কাশের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।
ইংরেজি অক্টোবর মাসের শুরুতে পাহাড়ি কাশের কাণ্ডের মাঝখান থেকে মঞ্জরি বের হয় এবং তাতে ফুল ধরে। ফুলের মঞ্জরি বেড়ে গিয়ে পাতা থেকে ২-৩ মিটার ওপরে চলে আসে। পাহাড়ি কাশফুলের রং নদীর চরে ফোটা কাশের থেকে আলাদা। পাহাড়ে যখন কাশফুল ফোটে, তখন এই বুনোফুলের চেহারা অনেকটা সবুজাভ মনে হয়। পরবর্তিতে এটি গোলাপি-রুপালি রং ধারণ করে এবং পরিণত বয়সে এর রং কিছুটা ফ্যাকাশে সাদা হয়ে যায়।
শহুরে পরিবেশে আজ কাশফুলের দেখা মেলা ভার। পাহাড়ি কাশফুল বেড়ে উঠুক পাহাড়ি সৌন্দর্যের সঙ্গে। পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করুক তবেই রক্ষা পাবে কাশফুল।
Post a Comment